আমাদের চ্যানেলে ঘুরে আসবেন SUBSCRIBE

আদুরি পাখি ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম™

সম্মানিত ভিজিটর আসসালামুয়ালাইকুম : আমাদের এই ওয়েবসাইটে ভালোবাসার গল্প, কবিতা, মনের অব্যক্ত কথা সহ শিক্ষনীয় গল্প ইসলামিক গল্প সহ PDF বই পাবেন ইত্যাদি ।

  সর্বশেষ আপডেট দেখুন →

হৃদয় জুড়ে শুধুই তুই ♥ || পর্ব - ০৭ || সেরা রোমান্টিক উপন্যাস || ভালোবাসার গল্প | AduriPakhi - আদুরি পাখি

Please wait 0 seconds...
Scroll Down and click on Go to Link for destination
Congrats! Link is Generated
হৃদয় জুড়ে শুধুই তুই 
পর্বঃ- ৭

__________
হ্যাঁ, ইশা আয়াশকে ভালোবাসে। অনেক ভালোবাসে। প্রচুর ভালোবাসে। অতোটাই ভলোবাসে; যতোটা ভালোবাসলে সে আয়াশকে ছাড়া নিজের অস্তিত্ব কল্পনাও করতে পারেনা। কিন্তু বোকা ইশা বুঝতে পারেনা সেটা। সে এটাও জানে না যে ভালোবাসা কাকে বলে। আর সে-ই বা আয়াশকে কতোটা ভালোবাসে। ইশা মনে করে ওর মনে আয়াশের জন্য যেই ফিলিংসটা আছে; সেটা শুধু একজন ভাইয়ের প্রতি একজন বোনের যেই ফিলিংসটা থাকা দরকার, সেটাই। ইশা যে আয়াশকে নিজের চেয়েও বেশি ভালোবাসে সেটা ইশার বোধগম্যের বাইরে। 
ইশা আয়াশের মাথা টিপছে; আর আয়াশ এক দৃষ্টিতে দেখে যাচ্ছে ওর ইশাকে। হ্যাঁ, ওর-ই তো ইশা। 

" পাগলি, আমাকে ভালোবাসবে ঠিকই। কিন্তু মুখে কখনো স্বীকার করতেই চাইবেনা। সবসময় এমন ভাব করে থাকবে যেন আমাকে ভালোই বাসে না। আচ্ছা ইশা কি আমাকে ভালোবাসার কথাটা বলতে চায় না? আই মিন আমার কাছে স্বীকার করতে চায় না? নাকি ও নিজেই বুঝতে পারেনা যে ও আমাকে ভালোবাসে? কোনটা?? ভালো কথা মনে পড়েছে তো। আমার এটা জানতেই হবে। যে করেই হোক ওর মুখ থেকে বের করতেই হবে এটা। আমি নিশ্চিত, ও আমাকে ভালোবাসে। আমার ইশা আমাকে ভালো না বেসে থাকতেই পারেনা। এখন শুধু জানার বিষয় হলো কোনটা ঠিক?? যেটা আমি মনে করছি সেটা? নাকি ইশা যেটা বলছে সেটা? আর নাকি ইশা নিজের মনের ফিলিংসটাই বুঝতে পারছেনা? কোনটা?? "

রুমের মাঝে পিনপতন নীরবতার মধ্য দিয়েই কেটে গেলো বেশ কিছু সময়। 

" আনিসা! ৯টা তো বেজে গেছে। চলো ডিনারের ব্যবস্থা করে ফেলি। নয়তো আবার দুই ভাই মিলে হৈচৈ শুরু করে দিবে, কেন খাবার দিতে দেরি হচ্ছে এই বলে। 

রুকসানা বেগমের কথায় সাই দিয়ে আনিসা বেগমও বলে উঠলেন---
" হ্যাঁ। একদম ঠিক বলেছো। বড় ভাইজানের থেকে তো আমার উনার বেশি তাড়াহুড়া সবকিছুতে। চলো যাই খাবারটা বেড়ে নিই। "

এই বলে দুই জা মিলে কিচেনে চলে গেলেন। মিনিট দশেকের মধ্যে দুই জা'য়ের টেবিলে খাবার সাজানো হয়েও গেলো। এরই মধ্যে রায়হান মাহমুদ আর হাসান মাহমুদও খাবার টেবিলে চলে এসেছেন। দুজনেই টুকটাক কথা বলতে বলতে চেয়ার টেনে বসে পড়লেন। রুকসানা বেগম আর আনিসা বেগম দুজনেই কিচেন থেকে ডাইনিংয়ে এসে নিজ নিজ স্বামীকে বসে থাকতে দেখে একে অপরের মুখের দিকে তাকালেন। তারপর পিক করে হেসে দিয়ে রুকসানা বেগম বললেন----- " চলে এসেছো তোমরা?? "

" হ্যাঁ ভাবি। চলে এসেছি। খুব জোরে ক্ষুধা লেগেছে। তাড়াতাড়ি খাবার দাও। আচ্ছা আয়াশ কই?? ও এখনও আসলোনা যে?? "

ভাইয়ের কথায় রায়হান মাহমুদও সাই দিয়ে বললেন--- " হ্যাঁ তাই তো! ইশা মা-ও তো এখনও আসলোনা। কোথায় ওরা?? "

" আরে কোথায় আবার যাবে?? ওদের কি একে অপরের পিছনে লাগা ছাড়া আর কোন কাজ আছে?? দাড়াও, আমি ডাকছি ওদের। "

এই বলে রুকসানা বেগম সেখানেই দাঁড়িয়ে থেকে আয়াশ আর ইশাকে জোরে জোরে ডাকতে লাগলেন। 

" আয়াশ! আয়াশ! ইশা! ইশা মা! খাবার খেতে আয় তোরা। "

মিনিট দুয়েকের মধ্যেই ইশা সিঁড়ির কাছে এসে দাঁড়ালো। রুকসানা বেগম সেদিকেই তাকিয়ে ছিলেন। তাই ইশাকে সিঁড়ির কাছে এসে দাঁড়াতে দেখে হেসে বললেন। 

" ঐ তো, আমার মেয়ে চলে এসেছে। আয় মা! এসে বস। আয়াশ কোথায়? ও আসছেনা?? "

ইশা নিচে নামলোনা। বরং সেখানে দাঁড়িয়ে থেকেই বললো--- " বড় আম্মু!  ভাইয়া নাকি খাবেনা। বলেছে তোমাদেরকে বলতে তোমরা যেন ভাইয়ার জন্য বসে না থেকে খেয়ে নাও।" 

" কিহ? খাবেনা কেন?? এতো বড় একটা রাত না খেয়ে খালি পেটে থাকবে কি করে?? "

স্ত্রীর কথার সাথে হাসান মাহমুদ ও একমত পোষণ করলেন--- " হ্যাঁ সেটাই তো। এখনকার রাতটা তো মাশাল্লাহ। এতো বড় একটা রাত না খেয়ে থাকবে কি করে?? শরীর খারাপ করবে তো। ইশা মা তুই আবার যা। আয়াশকে গিয়ে বল আমি ডাকছি। "

" আব্বু! আমি অনেক বলেছি, এখন শীতের দিন। তাই রাত অনেক বড়। না খেয়ে থাকলে শরীর খারাপ করবে। কিন্তু ভাইয়া তারপরেও আসছেনা। ওর এক কথা, ও নাকি খাবেনা। 

" উফফফফ, এই ছেলেকে নিয়ে আর পারিনা। রুকসানা! দেখো তো ওর আবার কি হলো?? খাবেনা বলছে কেন?? "

স্বামীর আদেশ শুনে " আচ্ছা আমি দেখছি। তোমরা খাওয়া শুরু করো। "

বলেই রুকসানা বেগম যেতে নিলে আনিসা বেগম পিছন থেকে ডেকে উঠলেন। 

" দাঁড়াও ভাবি! আমিও যাবো তোমার সাথে। তোমার কথা না শুনলেও আমার কথা তো আর ফেলতে পারবেনা। 

" হ্যাঁ, সেটা তুমি ঠিক বলেছো। চলো.......

এরপর দুই জা মিলে আয়াশের রুমের দিকে হাঁটা ধরলো। ইশা সিঁড়ির উপরের তাকেই দাঁড়িয়ে ছিলো। মা আর বড় মা'কে আয়াশের রুমের দিকে যেতে দেখে; সে-ও তাদের সাথে চলো গেলো। তিন জনেই এসে আয়াশের রুমে ঢুকলো। 

" আয়াশ! কি হয়েছে তোর?? খেতে না গিয়ে শুয়ে আছিস কেন?? "

আয়াশ কপালে এক হাত রেখে চোখ বন্ধ করে শুয়ে ছিলো। হঠাৎ মায়ের কণ্ঠ শুনে কপাল থেকে হাত সরিয়ে চোখ মেলে তাকালো। মা, ছোট মা, আর ইশা দাঁড়িয়ে আছে খাটের পাশে। মা আর ছোট মা'কে এই মুহূর্তে রুমে দেখে একটুও অবাক হলোনা আয়াশ। কারণ আয়াশ জানতো ওরা আসবে। তাই কোনো রকম  প্রতিক্রিয়া দেখালোনা সে। বরং ঠাঁই শুয়ে রইলো। আসলে উঠে বসার বিন্দু মাত্র ইচ্ছা নেই আয়াশের। তাই মূলত মা আর ছোট মা'কে দেখেও উঠে বসছেনা। নয়তো আয়াশ ওদের দেখে কখনোই এমন শুয়ে থাকতোনা। আয়াশ বড়দের কখন কোথায় কিভাবে আর কেমন করে রেসপেক্ট করতে হয় সেটা ভালো করেই জানে। 

" কি রে বাবা! আয় উঠ। খেতে যাবি না?? এখনও শুয়ে শুয়ে আমাদের দেখে যাচ্ছিস?? উঠ বাবা! খেতে চল। 

আনিসা বেগমের কথাতেও আয়াশ উঠলোনা। বরং ম্লান কণ্ঠে বললো---- " ছোট মা! আমার আসলে খেতে ইচ্ছে করছে না।  তোমরা যাও, গিয়ে খেয়ে নাও। আমার জন্য চিন্তা করোনা। একটা রাতেরই তো ব্যাপার। কোনো প্রবলেম হবেনা। "

" বললেই হলো?? এতো বড় একটা রাত। আর তুই না খেয়ে থাকবি?? সেটা কিছুতেই হবেনা। আয় চল না খেলে শরীর খারাপ করবে। 

" ছোট মা! প্লিজ আমায় জোর করোনা। জানোই তো, তোমরা জোর করলে আমি তোমাদের কথা ফেলতে পারিনা। এখনও পারবোনা। তাই প্লিজ জোর করোনা আমায়। আমার খাওয়ার বিন্দু মাত্র ইচ্ছা নেই।

" কিন্তু কেন?? 

" এমনিই। আমার খেতে ইচ্ছে করছে না। কেমন যেন বমি বমি পাচ্ছে। মনে হচ্ছে কিছু খেলেই বমি করে দিবো। তাই প্লিজ তোমরা আমাকে খাওয়ার জন্য জোর করোনা। 

আয়াশের কথা শুনে রুকসানা বেগম আর আনিসা বেগম দু'জনেই একে অপরের দিকে তাকালেন। কয়েক সেকেন্ড একে অপরের দিকে তাকিয়ে থেকে হঠাৎ করেই দুজনে পিক করে হেসে দিলেন। মা আর ছোট মা'কে এভাবে হাসতে দেখে আয়াশ অসহায় ফেস করে বললো---" কি হলো? তোমরা হাসছো কেন??"

আনিসা বেগম হাসতে হাসতেই বললেন---  
"আয়াশ! এটা কি শুনছি?? যেটা ইশার কাছ থেকে শোনার কথা। সেটা তোর কাছ থেকে শুনছি?? ব্যাপারটা উল্টো হয়ে গেলোনা। "

বলেই আনিসা বেগম আর রুকসানা বেগম আবারও হেসে উঠলেন। আম্মু আর বড় আম্মুর কথার আগা মাথা কিছুই বুঝতে পারছেনা ইশা। তাই আসার পর থেকে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে সে। কোনো কথাও বলছেনা; আর কোনো রিয়েকশনও দিচ্ছে না। কিন্তু ইশা অবুঝ হলেও আয়াশ তো আর অবুঝ না। ছোট মা'র কথার মানে বুঝতে পেরে আয়াশ বললো---

" আরে ছোট মা তুমিও না??  সবসময় ইয়ার্কি মোডে থাকো। তবে হ্যাঁ, আমার মনে হয়না আগামী দুই বছরের মধ্যে সেম কথাটা ইশার মুখ থেকে শুনতে পারবে।

" এ মা, কেন কেন কেন??

" কারণ তোমার মেয়ের জামাই অতোটাও খারাপ নয়; তাই। 

" ওওও আচ্ছা। 

চাচি আর ছেলের এমন দুষ্টু মিষ্টি কথা শুনে রুকসানা বেগম হেসে বললেন---- " আচ্ছা অনেক হয়েছে। এবার খেতে চলো সবাই। আয়াশ আয় বাবা, বেশি না খাস অল্প করে হলেও খেয়ে আসলে সেটাও ভালো। 

" না মা! সত্যিই আমি খাবোনা। আমার খেতে ইচ্ছে করছেনা। একে তো বমি বমি পাচ্ছে। তার উপর শরীরটাও বেশ খারাপ লাগছে। তাই প্লিজ তোমরা কেউ আমায় জোর করোনা। বরং তোমরা গিয়ে খেয়ে নাও। "

রুকসানা বেগমের এবার কেমন যেন লাগলো আয়াশের কথায়। আয়াশের কণ্ঠটা কেমন যেন ভার ভার লাগছে। আচ্ছা আয়াশের জ্বর-টর আসেনি তো??  রুকসানা বেগম আয়াশের দিকে সন্দিহান চোখে তাকিয়ে বললেন----

" আয়াশ! তোর কোনো রকম জ্বর-টর আসেনি তো আবার?? তোর কণ্ঠ এমন শোনাচ্ছে কেন?" 

আয়াশ এক গাল হেসে বললো----" আরে তেমন কিছু না মা, ঐ একটু হালকা পাতলা শরীর খারাপ লাগছে। তুমি টেনশন করোনা। ঠিক হয়ে যাবে এটা। "

ছেলের কথা শুনে রুকসানা বেগমের বুঝতে দেরি হলোনা আয়াশের সত্যিই জ্বর এসেছে। উনি দ্রুত আয়াশের পাশে গিয়ে বসে আয়াশের কপালে গালে ছুঁয়ে দেখতে লাগলেন। আর ছোঁয়ার সাথে সাথে আঁতকে উঠলেন। 

" এ কি আয়াশ! তোর শরীর তো জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে। আর তুই কিনা আমাদের না বলে রুমে বসে আছিস?? দেখেছো আনিসা ওর কান্ড?? শরীরে জ্বর বাঁধিয়ে চুপচাপ বসে আছে। আমাদের কাউকে বলার প্রয়োজন পর্যন্ত মনে করেনি ও। "

আয়াশের জ্বর হয়েছে শুনে আনিসা বেগমের মুখের হাসিটা নিমিষেই উবে গেলো। এক খন্ড মেঘ এসে ভীড় করলো উনার চোখে মুখে। উনি আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলেন না সেখানে। এক প্রকার দৌড়ে আয়াশের কাছে গিয়ে দাঁড়ালেন। আনিসা বেগমকে দেখে রুকসানা বেগম উঠে দাঁড়ালেন। 

" দেখো আনিসা! কি করেছে ও। জ্বর বাঁধিয়ে বসে আছে। আর বলছে একটু হালকা শরীর খারাপ করেছে। ওকে নিয়ে যে কি করি?? "

আনিসা বেগম কিছু না বলে ধপ করে আয়াশের পাশে বসে পড়লেন। তারপর আয়াশের কপালে গালে নিজেও একবার চেক করে নিয়ে আয়াশের গালে আলতো করে হাত রাখলেন। তারপর নরম গলায় বললেন-----

" আয়াশ! তোর জ্বর হয়েছে, আর তুই আমাদের কাউকে বলিসনি কেন?? জানিস ভাইজান শুনলে এখন কতোটা রাগ করবে?? আর তোর চাচ্চু শুনলে তো আমাকেই বকাবকি শুরু করে দিবে যে কেন আমি তোর খেয়াল রাখিনি। এমনটা কেউ করে?? 

" ওকে নরম করে বললে ও শুনবেনা আনিসা। ওকে মাইর দিতে হবে এখন থেকে। ও নিজেকে কি ভাবেটা কি হ্যাঁ?? আমাদের বুঝি টেনশন হয়না?? নিজেকে বড় ভাবতে শুরু করে দিয়েছে?? "

আয়াশ মুচকি হাসলো মায়ের রাগ দেখে। কারণ সে জানে, মা ওকে প্রচুর ভালোবাসে। আর তাই রাগ করে এমন বলছে। 

" আহ ভাবি! এতো রাগ করছো কেন?? ও এখনও ছেলে মানুষ। রাগারাগি করলে তো আর সেরে যাবেনা। তুমি বরং বসো ওর পাশে; আমি গিয়ে ইশার আব্বুকে বলি যেন ডক্টরকে খবর দেয়। 

" হ্যাঁ, সেটাই করো।" রুকসানা বেগমের কণ্ঠে কাতরতা। 

আয়াশ সরশ গলায় বললো ----
" ছোট মা! প্লিজ তুমি বাবা আর চাচ্চুকে বলোনা এই বিষয়ে। আমার তেমন কিছুই হয়নি। জাস্ট একটু জ্বর এসেছে মাত্র। আর সেটাও কাল সকাল হতে হতে সেরে যাবে। আমি তো মেডিসিন নিয়েছি। দেখবে সকাল হলেই আমি ঠিক হয়ে গেছি। তোমরা প্লিজ এটা বাবা আর চাচ্চুকে বলোনা। 

" দেখলে আনিসা! এখনও ও নিজের কথা রাখতে চাইছে। একবারও আমাদের কথা ভাবছেনা। ওর বাবা যদি জানতে পারে ওর জ্বর হয়েছে; আর আমরা সেটা ওর বাবার থেকে লুকিয়ে গেছি। তাহলে নির্ঘাত আমার উপর রাগারাগি করবে। পুরো বাড়ি তো মাথায় তুলে ফেলবে।

রুকসানা বেগমের কথায় সাই দিয়ে আনিসা বেগম মলিন কণ্ঠে বললেন---- 
" আমি জানি ভাবি। শুধু ভাইজান-ই নয়; ইশার বাবাও এটা জানতে পারলে আমার উপর রেগে যাবে। "

মা আর ছোট মা'কে এমন টেনশন করতে দেখে আয়াশ এবার সিরিয়াস হয়ে বললো----- 
" মা! ছোট মা! প্লিজ তোমরা বুঝার চেষ্টা করো। আমার অতোটাও জ্বর হয়নি যে এতো রাতে ডক্টর ডাকতে হবে। আর আমি তো বলেছি, আমি ঔষধ খেয়েছি। আচ্ছা শুনো, আজ রাতটা না হয় একটু দেখি। যদি কাল সকালেও জ্বর থাকে; তাহলে তোমাদের বলতে হবেনা। আমি নিজেই ডক্টরের সাথে মিট করবো। হ্যাপি..?? "

আয়াশের মুখে ঔষধ খেয়েছে কথাটি শুনেও কেন যেন রুকসানা বেগম খুশি হতে পারলেন না। সন্দিহান গলায় বললেন---- " সত্যিই ঔষধ খেয়েছিস তো?? নাকি আমাদেরকে মিথ্যা শান্তনা দিচ্ছিস?? কোনটা??

" আরে সত্যি বলছি মা। আমি অফিস থেকে আসার পর পরই ঔষধ খেয়ে নিয়েছি। 

" আচ্ছা তাহলে তুই শুয়ে থাক। আমি তোর জন্য খাবার রুমে নিয়ে আসছি। 

" তোমার যেতে হবেনা ভাবি। তুমি বরং আয়াশের কাছে বসো। আমিই নিয়ে আসছি। 

আনিসা বেগমের কথা শুনে রুকসানা বেগম আর দ্বিমত করলেন না। কারণ উনার জানা আছে, আয়াশের প্রতি আনিসার ভালোবাসা কতটুকু। রুকসানা বেগমের তো মাঝে মাঝে মনে হয়, আনিসার মতো জা পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার। আনিসা আয়াশকে যতোটা ভালোবাসে; পৃথিবীর কোনো মা-ই হয়তো তার সন্তানকে অতোটা ভালোবাসে না। ইশা এতো সময় ধরে চুপচাপ ওদের কান্ড দেখে যাচ্ছিলো। কারণ ও ছোট মানুষ। ওর কি বা বলার আছে। বরং চো ওর তো আয়াশের জ্বর হয়েছে শুনেই হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। এক দৃষ্টিতে আয়াশের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। মনে হচ্ছে আয়াশের জ্বর হয়েছে শুনে সবার থেকে ওর-ই বেশি টেনশন হচ্ছে। দেখেই কেমন চিন্তিত চিন্তিত লাগছে। ইশার ব্যাপারটা আয়াশের চোখ এড়ালোনা। আয়াশ বুঝতে পারছে ওর জ্বর হয়েছে শুনে ইশা ঘাবড়ে গিয়েছে। আয়াশ মনে মনে হাসলো। 

" পাগলি, আমায় ভালোবাসবে তবুও মুখে বলবেনা। এই দেখো, আমার জ্বর হয়েছে শুনে কেমন বানিয়ে ফেলেছে মুখটা।  বললে কি হয় যে আয়াশ আমি তোমায় ভালোবাসি। শুধু একবার তো বলতে পারতো। তাহলে সব ভালোবাসা আমি উজাড় করে দিতাম ওকে। পৃথিবীর সব সুখ এনে ওর পায়ের কাছে ফেলতাম। আচ্ছা ও কি কখনোই বুঝবেনা আমার ফিলিংসটা?? নাকি বুঝেও না বুঝার ভান করছে। "

কথাগুলো নিজের মনে ভেবে আয়াশ লম্বা একটা শ্বাস ছাড়লো আনমনে। একটু পরেই আনিসা বেগম খাবারের প্লেট নিয়ে রুমে আসলেন। তবে প্লেট দেখে মনে হচ্ছে একজনের খাবার নয় দুই দুই জনের খাবার নিয়ে এসেছে সে। আনিসা বেগম প্লেটটি সেন্টার টেবিলের উপর রাখতেই আয়াশ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো। 

" এ কি ছোট মা! তুমি তো একজনের নয় বরং দুই জনের খাবার নিয়ে এসেছো। এতোগুলা খাবার কি আমার একা খাওয়া সম্ভব??  

আয়াশের কথা শুনে রুকসানা বেগম ম্লান কণ্ঠে বললেন---- 
" আনিসা শুধু তোর জন্য একা খাবার নিয়ে আসেনি; ইশার জন্য সহ এনেছে। তাই না আনিসা?? 

" হ্যাঁ ভাবি। 

" কিন্তু ও তো আমাদের ছেড়ে খায় না। এখন আয়াশের সাথে এখানে কি খাবে?? 

" না খেয়ে যাবে কোথায়?? ইশা খেয়ে ইশার বাপ সহ খাবে। 

" আম্মু! অসুস্থ তো ভাইয়া। তাহলে আমি কেন এখানে খাবো?? তুমি জানোনা আমি তোমাদের ছাড়া খেতে পারিনা??  এখানে ভাইয়া খাক। চলো আমরা নিচে গিয়ে খাবো। আব্বু আর বড় আব্বু হয়তো এতক্ষণে খেয়ে যে যার রুমে চলে গেছে। 

ইশার কথায় আনিসা বেগম আপত্তি করে বললেন -----
" আমরা সবাই নিচে গিয়ে খেলে আয়াশ একা হয়ে যাবেনা?? তখন ওর কি আর একলা একলা খেতে ইচ্ছে করবে?? তাই তুই ওর সাথে এখানে রুমে বসেই খাবি। আমি হাত ধোয়ার বাটি থেকে শুরু করে সব নিয়ে এসেছি। তারপরেও কিছু লাগলে আমাদের ডাকবি। 

" কিন্তু আম্মু.....

" কোনো কিন্তু না। আমরা নিচে যাচ্ছি। ক্ষুধা তো আমাদের ও লেগেছে, তাই না??  চলো ভাবি। 

" ছোট মা! ও যখন চাইছেনা থাক। আমার সাথে কারো খেতে হবেনা। আমি একাই খেয়ে নিবো। তোমরা যাও, গিয়ে খেয়ে নাও। "

কথাগুলো আয়াশ ইশার দিকে তাকিয়েই বললো। ইশার বুঝতে দেরি হলোনা আয়াশ রাগ করে এমন বলছে। আর যদি সত্যিই আয়াশ রাগ করে তাহলে অনেক কাটখোড় পোড়াতে হবে ওকে আয়াশের রাগ ভাঙ্গাতে। তাই মায়ের কথাটা রাখাই এখন বুদ্ধিমানের কাজ হবে। 

" ইশা মা! চল তাহলে। আয়াশ  একা খেতে পারবে বলছে। তাহলে আমরা বসে থেকে কি করবো। চল আমরাও নিচে গিয়ে খেয়ে নিই। আনিসা চলো। "

চলবে........
®আয়মন সিদ্দিকা উর্মি

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ হৃদয় জুড়ে শুধুই তুই ♥ || পর্ব - ০৭ || সেরা রোমান্টিক উপন্যাস || ভালোবাসার গল্প | AduriPakhi - আদুরি পাখি এই পোস্ট টি পড়ার জন্য। আপনাদের পছন্দের সব কিছু পেতে আমাদের সাথেই থাকবেন।

Post a Comment

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.
A+
A-
দুঃখিত লেখা কপি করার অনুমতি নাই😔, শুধুমাত্র শেয়ার করতে পারবেন 🥰 ধন্যবাদান্তে- আদুরি পাখি